গ্যাস্ট্রিক সমস্যা অনেকের জন্য নিয়মিত সমস্যার কারণ হয়। এটি এক ধরনের হজমজনিত রোগ যা পেটে ব্যথা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার মূল কারণ এবং লক্ষণগুলো জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন খাবার খাই যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে। এই সমস্যার সমাধান না করলে এটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় পরিণত হতে পারে। তাই, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিরোধের উপায় জানা প্রয়োজন। এ লেখায়, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এটি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার বিষয়েও আপনাকে প্রয়োজনীয় তথ্য দেবে। এই তথ্যগুলো আপনাকে স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে সাহায্য করবে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এক সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে এবং আমাদের শরীরে বিভিন্ন প্রভাব ফেলে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হলে পেট ব্যথা, অম্বল, পেট ফাঁপা, এমনকি বমি হতে পারে। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং এর প্রতিকার জানা গুরুত্বপূর্ণ।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। প্রধানত তিন ধরনের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দেখা যায়:
অম্বল: খাবারের পর পেটে জ্বালাপোড়া, বুকজ্বালা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
পেট ফাঁপা: পেটে গ্যাস জমে পেট ফেঁপে ওঠে। এতে অস্বস্তি হয়।
পেট ব্যথা: পেটের বিভিন্ন অংশে ব্যথা অনুভূত হয়।
এছাড়া কিছু সময় খাবারের পর বমি হতে পারে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণে খাবার হজম হয় না। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই গ্যাস্ট্রিক সমস্যার উপসর্গগুলি চিনে রাখা জরুরি।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার বিভিন্ন প্রভাব আমাদের শরীরে দেখা যায়। পেটের সমস্যা থেকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও সমস্যা হতে পারে।
পেট ব্যথা: পেটের ব্যথা খুবই অসহনীয়। এটি আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায়।
অম্বল: বুক জ্বলা ও পেট জ্বালা খুবই অস্বস্তিকর। এটি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
বমি: বমি হলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। খাবার হজম না হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণে শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। তাই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি পেটের ভিতরে গ্যাস জমা হওয়ার কারণে ঘটে। গ্যাস্ট্রিকের কারণে পেট ব্যথা, অস্বস্তি এবং হজমের সমস্যা হতে পারে। অনেক কারণে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কারণসমূহ হল অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ ও উদ্বেগ। এই সমস্যাগুলি সমাধান করতে, কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রধান কারণ। অনেক সময় আমরা জাঙ্ক ফুড খাই যা আমাদের পেটের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবার হজমে সমস্যা করে এবং গ্যাস তৈরি করে।
নিম্নলিখিত টেবিলে কিছু অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং তাদের প্রভাব উল্লেখ করা হলো:
খাদ্য |
প্রভাব |
---|---|
ফাস্ট ফুড |
গ্যাস এবং হজমে সমস্যা |
কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস |
পেটে গ্যাস জমা হওয়া |
চর্বিযুক্ত খাবার |
হজমে সমস্যা এবং গ্যাস |
অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার |
পেটের অস্বস্তি |
অতিরিক্ত খাওয়া ও অনিয়মিত খাওয়া গ্যাস্ট্রিক সমস্যার অন্যতম কারণ। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়া, ফাইবারযুক্ত খাবার কম খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হতে পারে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ গ্যাস্ট্রিক সমস্যার আরেকটি বড় কারণ। চাপের মধ্যে থাকলে আমাদের হজম প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়। এ কারণে পেটে গ্যাস জমা হতে পারে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগের কারণে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এড়ানোর কিছু উপায়:
যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করুন
প্রতিদিনের ব্যায়াম করুন
নিয়মিত বিশ্রাম নিন
সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য মানসিক চাপ একটি বড় কারণ। কাজের চাপ, পারিবারিক সমস্যা, এবং অন্যান্য মানসিক উদ্বেগ গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়াতে পারে। তাই মানসিক চাপ কমানোর জন্য সঠিক পন্থা অবলম্বন করা উচিত।
নিয়মিত বিশ্রাম ও সঠিক ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো মানসিক উদ্বেগ কমাতে কার্যকর।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেক মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ভোগান্তির কারণ হয়। এটি সাধারণত পেটের মধ্যে অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদনের ফলে ঘটে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রধান কারণগুলি হল অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত মশলাদার খাবার খাওয়া, দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকা, ধূমপান ও মদ্যপান। লক্ষণ ও উপসর্গগুলি জানলে আমরা সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার অন্যতম সাধারণ লক্ষণ হল পেটব্যথা। এটি সাধারণত পেটের উপরের অংশে অনুভূত হয় এবং মৃদু থেকে তীব্র হতে পারে। পেটব্যথা সাধারণত খাবার খাওয়ার পর বাড়ে। এটি কিছুক্ষণ স্থায়ী হতে পারে অথবা দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে।
বার বার কষ্ট – খাবার খাওয়ার পর বা খালি পেটে পেটব্যথা হতে পারে।
পেট ফাঁপা – পেটে গ্যাস জমে পেট ফেঁপে যেতে পারে।
বমি বমি ভাব – পেটব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাবও থাকতে পারে।
পেটব্যথা কমাতে কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। যেমন:
পদ্ধতি |
বর্ণনা |
---|---|
হালকা খাবার |
অতিরিক্ত মশলাদার ও তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা। |
পর্যাপ্ত পানি পান |
প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা। |
যোগব্যায়াম |
নিয়মিত যোগব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা। |
অ্যাসিড রিফ্লাক্স হল আরেকটি সাধারণ গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণ। এটি ঘটে যখন পেটের অ্যাসিড খাদ্যনালীর দিকে উঠে আসে। অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ফলে বুক জ্বালা, গলা ব্যথা ও বমি বমি ভাব হয়।
এটি সাধারণত ঘুমানোর সময় বা খাবার খাওয়ার পর হয়। কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে যেমন:
অতিরিক্ত খাওয়া – একসঙ্গে অনেক বেশি খাবার খাওয়া।
মশলাদার খাবার – অতিরিক্ত মশলাদার ও তেলযুক্ত খাবার খাওয়া।
ধূমপান ও মদ্যপান – ধূমপান ও মদ্যপানের ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়ে।
অ্যাসিড রিফ্লাক্স কমাতে কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে:
উপায় |
বর্ণনা |
---|---|
খাওয়ার পর হাঁটা |
খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটা এবং শুয়ে না পড়া। |
উচ্চ বালিশ ব্যবহার |
ঘুমানোর সময় মাথার নিচে উচ্চ বালিশ ব্যবহার করা। |
ধূমপান বন্ধ |
ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলা। |
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেকেই ভোগে। খাবার গ্রহণের ভুল পদ্ধতি এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রধান কারণ। এই সমস্যা পেটে ব্যথা, অম্বল, এবং পেট ফাঁপা সৃষ্টি করে। প্রতিরোধের উপায় জানা থাকলে এই সমস্যা সহজেই এড়ানো যায়।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা প্রতিরোধে খাদ্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত তেল এবং মশলা যুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কম হয়।
নিম্নোক্ত খাদ্যগুলো গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে:
শাক-সবজি
ফল-মূল
হালকা খাবার
পানি বেশি পান করা
নিম্নোক্ত খাদ্যগুলো এড়ানো উচিত:
ফাস্টফুড
চকলেট
অতিরিক্ত মশলা
অ্যালকোহল
খাবার গ্রহণের সময় ধীরে ধীরে খাওয়া উচিত। খাবার চিবিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কম হয়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করা উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম গ্যাস্ট্রিক সমস্যার অন্যতম প্রতিরোধক। শরীরচর্চা করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। ব্যায়াম করতে গেলে শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সক্রিয় থাকে।
নিম্নোক্ত ব্যায়ামগুলো গ্যাস্ট্রিক সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে:
যোগব্যায়াম
প্রাণায়াম
হাঁটাহাঁটি
জগিং
প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। খাবারের পর হালকা হাঁটাহাঁটি করলে হজম ভালো হয়। স্ট্রেস কমানোর জন্য যোগব্যায়াম খুবই কার্যকর। প্রাণায়াম হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা একটি সাধারণ কিন্তু বিরক্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি পেটের এসিডের অতিরিক্ত উত্পাদনের কারণে ঘটে। এই সমস্যার প্রধান কারণগুলি হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত খাবার খাওয়া, মানসিক চাপ এবং স্থূলতা। গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হলে পেট ব্যথা, অম্বল, বমি বমি ভাব, বুক জ্বালা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। এই সমস্যা প্রতিরোধের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত খাবার খাওয়া এবং মানসিক চাপ কমানো জরুরি। চিকিৎসার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের বিষয়গুলো আলোচনা করা হলো।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার চিকিৎসায় ঔষধের ব্যবহার খুবই কার্যকর। প্রাথমিক পর্যায়ে অ্যান্টাসিড ব্যবহার করা হয়, যা পেটের এসিড নিরপেক্ষ করে। এইচ২ রিসেপ্টর ব্লকার ঔষধও গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এগুলো এসিডের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ঔষধ পেটের এসিড উৎপাদন প্রায় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।
ঔষধের নাম |
প্রভাব |
---|---|
অ্যান্টাসিড |
পেটের এসিড নিরপেক্ষ করে |
এইচ২ রিসেপ্টর ব্লকার |
এসিডের উৎপাদন কমায় |
প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর |
এসিড উৎপাদন বন্ধ করে |
ঔষধ সঠিকভাবে গ্রহণ করা খুবই জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ ব্যবহার করা উচিত নয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধের ডোজ এবং সময় নির্ধারণ করা উচিত।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য বাড়িতে কিছু সহজ চিকিৎসা করা যায়। এই চিকিৎসাগুলি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ।
আদা: আদার রস বা চা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতার রস বা চা পেটের এসিড কমাতে সহায়ক।
ফেনেল বীজ: ফেনেল বীজ চিবিয়ে বা ফেনেল চা পান করা যেতে পারে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লেবুর রস এবং গরম পানি পান করলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমে। খাবারের পর পরই শুয়ে পড়া উচিত নয়। খাবার খাওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা উচিত।
মানসিক চাপ কমানোর জন্য যোগব্যায়াম এবং ধ্যান করা উচিত। ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকা উচিত।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্যাস্ট্রিক সমস্যা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত তেল, মশলা এবং ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। পর্যাপ্ত পানি পান করা প্রয়োজন।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, যা সাধারণত অ্যাসিডিটি হিসেবে পরিচিত, অনেকের জন্য একটি প্রচলিত স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি মূলত পেটের অ্যাসিড উৎপাদনের বৃদ্ধি বা অম্লতার কারণে ঘটে। এই সমস্যার প্রধান লক্ষণগুলি হল বুক জ্বালা, পেটে ব্যথা এবং খাদ্য হজমে সমস্যা। গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দীর্ঘমেয়াদে আরও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসার পাশাপাশি এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এই সমস্যার কারণে শরীরে নানা ধরণের পরিবর্তন ঘটে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার: দীর্ঘমেয়াদী অ্যাসিডিটির কারণে পেটে গ্যাস্ট্রিক আলসার হতে পারে। এটি পেটে ব্যথা ও রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারে।
জরায়ু ক্যান্সার: গ্যাস্ট্রিক সমস্যা যদি দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকে তাহলে জরায়ু ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ে।
অ্যাসিড রিফ্লাক্স: অ্যাসিডিটির কারণে পেটের অ্যাসিড খাদ্যনালীতে উঠতে পারে, যা অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা জিওআরডি নামে পরিচিত।
খাদ্য হজমে সমস্যা: গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণে খাদ্য হজমে সমস্যা হতে পারে। এটি পেটফাঁপা, গ্যাস ও বমি বমি ভাবের কারণ হতে পারে।
নিচের টেবিলে কিছু স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখানো হল:
স্বাস্থ্যগত জটিলতা |
লক্ষণ |
---|---|
গ্যাস্ট্রিক আলসার |
পেটে ব্যথা, রক্তক্ষরণ |
জরায়ু ক্যান্সার |
অল্প লক্ষণ, ধীরে ধীরে বৃদ্ধি |
অ্যাসিড রিফ্লাক্স |
বুক জ্বালা, গলা জ্বালা |
খাদ্য হজমে সমস্যা |
পেটফাঁপা, গ্যাস, বমি |
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা শুধুমাত্র শারীরিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে না, এটি মানসিক স্বাস্থ্যেও বিরূপ প্রভাব ফেলে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। এটি উদ্বেগ ও উদ্বেগজনিত ব্যাধির কারণ হতে পারে।
অনিদ্রা: পেটে ব্যথা ও বুক জ্বালার কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়।
উদ্বেগ: গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণে উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়, যা মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। নিচের টেবিলে মানসিক স্বাস্থ্যের কিছু জটিলতা দেখানো হল:
মানসিক স্বাস্থ্য জটিলতা |
লক্ষণ |
---|---|
অনিদ্রা |
ঘুমের সমস্যা, ক্লান্তি |
উদ্বেগ |
চিন্তা, উদ্বেগ |
মনোযোগের অভাব |
কাজে মনোযোগে সমস্যা |
সুতরাং, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর চিকিৎসা ও প্রতিরোধের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি সাধারণ সমস্যা। অনেকেই এই সমস্যায় ভুগছেন। খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন গ্যাস্ট্রিক সমস্যাকে প্রভাবিত করতে পারে। সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কিছু খাবার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। আবার কিছু খাবার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
নিম্নলিখিত টিপস গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে:
মসলাযুক্ত খাবার কম খাওয়া উচিত। এটি পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেমন সবজি, ফলমূল, এবং শস্য।
অতিরিক্ত তেল এবং চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত।
ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকা উচিত।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন গ্যাস্ট্রিক সমস্যার উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু সাধারণ পরিবর্তন গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
নিম্নলিখিত টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে:
নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
নিয়মিত ঘুম নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়তে পারে।
খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়া এড়িয়ে চলা উচিত। এতে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
চাপ কমানো উচিত। মানসিক চাপ গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়াতে পারে।
খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
পেটে অতিরিক্ত গ্যাসের লক্ষণ হলো পেট ফাঁপা, বদহজম, ঢেকুর তোলা, পেটে ব্যথা ও অস্বস্তি। অন্যান্য লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব, গ্যাস নিঃসরণ।
গ্যাস্ট্রিক হলে মশলাদার খাবার, চকলেট, ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, তেলযুক্ত খাবার, টমেটো, পেঁয়াজ এবং সাইট্রাস ফল এড়িয়ে চলুন।
দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণগুলো হলো পেটব্যথা, অম্বল, বমি, খাবারে অরুচি, পেটফাঁপা, ওজন কমা এবং ক্লান্তি।
প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খান, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন। মানসিক চাপ কমান।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা প্রতিরোধে সুস্থ জীবনযাপন অপরিহার্য। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খান। অতিরিক্ত তেল-মশলা থেকে দূরে থাকুন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন। শরীরচর্চা করুন। ব্যায়াম গ্যাস্ট্রিক সমস্যার ঝুঁকি কমায়। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হলে, দ্রুত ব্যবস্থা নিন। খাওয়ার পর বিশ্রাম নিন। সমস্যার অবহেলা করবেন না। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।